আপনার মনের মতো করে ঘরকে সাজিয়ে তুলতে বা রিফাব্রিশ করতে প্রয়োজন একজন যোগ্য এবং অভিজ্ঞ ইন্টেরিয়র ডিজাইন পার্টনারের। একজন প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ ইন্টেরিয়র ডিজাইনার তার দক্ষতা দিয়ে চমৎকারভাবে আপনার ঘরটিকে আপনার মনের মতো করে সাজিয়ে তুলতে পারে। তাই আপনার ইন্টেরিওরের জন্য একজন যোগ্য এবং পেশাদার ইন্টিরিয়র ডিজাইনার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এই কাজটি কিন্তু এতটাও সহজ নয়।
ইন্টেরিওর ডিজাইন এর জন্য পার্টনার নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত। অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, স্টাইল এবং নান্দনিকতা, যোগাযোগ, অর্থ, খ্যাতি এবং রিভিউ বা পর্যালোচনা – এই প্রতিটি বিষয়ই এক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
এই ব্লগে আমরা সেই দিকগুলো নিয়েই আলোচনা করব, যা আপনাকে একটি আদর্শ ইন্টেরিয়র ডিজাইন পার্টনার নির্বাচন করতে সাহায্য করবে৷
- পূর্বের কাজের গুণমান
- সৃজনশীল ইন্টেরিওর ডিজাইন যা আপনার স্টাইলটিকে যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলবে
- উপযুক্ত মূল্য স্থির করা
- সময়ানুবর্তীতা এবং যোগাযোগ
- খ্যাতি এবং রিভিউ বা পর্যালোচনা
- চমৎকার গ্রাহক সেবা
পূর্বের কাজের গুণমান
আপনার ইন্টেরিওর ডিজাইনের পার্টনার নির্বাচন করার সময় বিবেচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো পূর্বের কাজের গুণমান কেমন তা খুঁটিতে দেখা। এটি ইন্টেরিওর ডিজাইন পার্টনারের সৃজনশীলতা, দক্ষতা এবং ডিজাইনের কনসেপ্টকে ফুটিয়ে তোলার সক্ষমতাকে ফুটিয়ে তোলে। এর মাধ্যমে সুক্ষ্ম বিষয়গুলো এবং পেশাদারিত্বের প্রতি তাদের মনোযোগ প্রতিফলিত হয়। এর মাধ্যমে সীমিত স্থানের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং পুনরায় নতুন রুপে সাজিয়ে তোলা অর্থাৎ রিফাব্রিশিংয়েও তাদের দক্ষতা প্রকাশ পায়। কোয়ালিটি বা মানের উপর নির্ভর করে একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার তার দক্ষতা প্রদর্শন করে থাকে।
একজন দক্ষ ইন্টেরিয়র ডিজাইনার বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করতে পারে। তারা কাজের বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং কাজটিকে সঠিক রুপ কার্যকর করার পদ্ধতিও তৈরি করতে পারে সহজেই। এই ব্যাপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ক্লায়েন্টদের অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে তাদের পার্টনাররা অবশ্যই আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী তাদের সেরা মানের ডিজাইনটিই দিবে।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনে সৃজনশীলতার ছোঁয়া যেখানে ফুটে উঠবে আপনার স্টাইল
ঘরের শৈলী বা স্টাইল এবং নান্দনিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এটি আপনার ঘরের আদল এবং অনুভূতির সাথে মিশে থাকে। আপনি আপনার ইন্টেরিয়র ডিজাইন পার্টনারের পূর্বের কিছু প্রজেক্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের কাজের ধাচগুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন যেন তাদের আগের কাজের ডিজাইনের নীতি এবং স্টাইল সম্পর্কে আপনি একটি স্বচ্ছ ধারণা পান। এর মাধ্যমে তাদের কাজের গন্ডি বা সক্ষমতা সম্পর্কেও আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন।
আপনার পছন্দের সাথে তাদের স্টাইলটি মানানসই হওয়ার ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার ইন্টেরিওরের স্টাইলিং এবং নান্দনিকতা নিয়ে অনিশ্চিত হন, তবে তারা আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আপনার স্পেসের জন্য সঠিক স্টাইলিংটি ফুটিয়ে তুলতে কাজ করবে। তারা আপনার প্রজেক্টের প্রতিটি বিষয়েই আপনার সাথে পরামর্শ করবে যেন আপনার কাঙ্খিত স্পেসটি কেমন হবে তা সম্পর্কে আপনার স্বচ্ছ ধারণা থাকে । যখন কথা আসে ডিজাইন এবং অ্যাস্থেটিকস বা নান্দনিকতার, তখন আপনাকে অবশ্যই আপনার পছন্দ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে হতে হবে। কেননা প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনার দেয়া সেই ধারণাগুলাই দৃশ্যমান হয়ে উঠবে এবং ইন্টেরিওরে স্বতন্ত্রতা প্রকাশ করবে – যা একজন সঠিক ডিজাইন পার্টনার আপনার কাছ থেকে নিয়ে আসতে ভালভাবে সক্ষম হবেন!
সময়ানুবর্তিতা এবং যোগাযোগ
সক্রিয় যোগাযোগ পুরো প্রজেক্ট জুড়ে নতুন সব আইডিয়া এবং চিন্তাভাবনা বিকাশের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। যোগাযোগের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দের সাথে পেশাদার চিন্তাধারার এই মিশ্রণটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই বেরিয়ে আসে দারুণ একটি ফলাফল।
একটি প্রজেক্ট নির্মাণের সময়সূচী বা স্থানান্তরের তারিখের মতো কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে প্রজেক্টটির সময়সীমা। একটি নির্ভরযোগ্য পার্টনার প্রজেক্টটি সময়সীমার মধ্যে সম্পূর্ণ করতে অটল থাকে। এ ক্ষেত্রে সময় খুবই মূল্যবান কেননা ইন্টেরিওর ডিজাইন প্রজেক্ট সম্পূর্ণ করতে যত বেশি সময় লাগে, খরচও তত বেশি হতে পারে।
উপযুক্ত মূল্য স্থির করা
একজন সঠিক পার্টনার আপনার আর্থিক সীমার মধ্যে থেকে সবচেয়ে ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য কাজ করবে। টাইট বা সীমিত বাজেটের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় তারা লিমিটেড বাজেটের মধ্যেও সেরা কাজটি আপনাকে দিবে। আপনি আপনার পছন্দ এবং সঠিক প্রাইসিং এর ওপর ভিত্তি করে খুঁজে পেতে পারেন সঠিক ডিজাইন পার্টনার।
অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, প্রফেশনাল ইন্টেরিওর ডিজাইনারদের প্রজেক্টগুলো অপেশাদার বা আনপ্রফেশনালদের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। অভিজ্ঞ ডিজাইন পার্টনাররা সবসময়ই আপনার বাজেটের কথা মাথায় রাখবেন। তারা আপনাকে আপনার বাজেট অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো পরামর্শটি দিবে, যেন আপনি আপনার বাজেটের মোঢ্যে সেরা ফলাফলটি পেতে পারেন। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে যেন আপনার পছন্দের বিষয়গুলোকে ছাড় দিতে না হয়। আর এই বিভিন্ন খুঁটিনাটি সৃজনশীল উপায়ে সমাধান করাই আপনার ডিজাইন পার্টনারের কাজ।
পরিচিতি এবং পর্যালোচনা
ডিজাইন পার্টনার সম্পর্কে ভালো রিভিউ বা সুপরিচিতি আপনাকে ডিজাইন পার্টনারের খ্যাতি সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারে। আপনার মূল্যবান স্পেসটিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য অবশ্যই একটি মর্যাদা সম্পন্ন ডিজাইনিং পার্টনার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আপনি ফেইসবুক বা ইন্টারনেটে রিভিউ খুঁজতে পারেন, অথবা পরিবার কিংবা বন্ধুমহলে ইন্টেরিয়র ডিজাইনারদের নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জিজ্ঞাসা করতে পারেন। এটি আপনাকে আপনার বিকল্প অপশনগুলো খুঁজে পেতে এবং আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
মনে রাখবেন, প্রত্যেকে যখন তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতাগুলো ডিজাইন পার্টনারের সাথে ভাগ করে নেবে, তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই আপনার নিজস্ব চাহিদাগুলিকে বিবেচনা করতে হবে।
চমৎকার গ্রাহক সেবা
ইন্টেরিওর ডিজাইন পার্টনারের উপর নির্ভর করে এই দিকটি কিছুটা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। একটি ভালো ইন্টেরিয়র পার্টনার আপনাকে চমৎকার গ্রাহক সেবা দিবে। ডিজাইন পার্টনারের কোম্পানির নীতিমালায় এ বিষয়গুলো অবশ্যই উল্লেখ থাকবে। তারা আপনার প্রয়োজনীয়তা বোঝার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে, যা সম্পর্কে আপনি আগে থেকে অবগত নাও থাকতে পারেন। তাদের কাজ পরিপূর্ণভাবে আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার আগে কোয়ালিটি চেক বা গুণমান পরীক্ষা করবে এবং বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে মান নিশ্চিত করবে, যা আপনার স্পেসের জন্য উপযোগী।
ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র ডেলিভারির সময়েই তাদের গ্রাহক সেবা প্রদান করবে না বরং প্রজেক্ট শেষেও গ্রাহক সেবা বা আফটার সার্ভিস নিশ্চিত করবে। তাদের সেলস টিম কাজ শেষে এটাও নিশ্চিত করবে যে, আপনি আপনার ডেলিভারিতে সন্তুষ্ট কি না এবং আপনার মূল্যবান ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়া জানতে চাবে।
ভালো খ্যাতিসম্পন্ন কোম্পানিগুলো তাদের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয়তাগুলো শুনে এবং চাহিদা অনুযায়ী সেবা দান করে এবং কঠিন বিষয়গুলোকে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে।
কাস্টমার সার্ভিস বা গ্রাহক পরিষেবা আশানুরূপ না হলে ইন্টেরিওর ডিজাইন পার্টনারের অন্যান্য ফিচার যত ভালোই হোক না কেন তা কার্যকর হবেনা। একটি দক্ষ ডিজাইন পার্টনার সবসময়ই ভালো মানের ক্লায়েন্ট সার্ভিস বা পরিষেবা দেয় এবং গ্রাহকদের সন্তুষ্টি বজায় রাখে।
সংক্ষেপে বলা যায়, আপনার স্পেসের জন্য সঠিক ইন্টেরিওর ডিজাইন পার্টনার নির্বাচন করা কঠিন কিছু নয় যদি আপনি উপরোক্ত কয়েকটি বিষয় মনে রাখেন।
এখন ভাবছেন, উপরের বর্ণনার সাথে যায় এমন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার কোথায় পাবেন?
যোগাযোগ করুন Sheraspace– এ, যদি আপনি খ্যাতিসম্পন্ন ইন্টেরিওর পার্টনারের মাধ্যমে সাজিয়ে তুলতে বা রেনোভেট করতে চান আপনার স্পেসটিকে।
এই ব্লগটি ইংরেজিতে পড়ুন।
অনুবাদ: জান্নাতুল তাজরিয়া ফারসি
No Comments