ঘরকে গুছিয়ে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে তোলার মাঝে রয়েছে এক খুশির আমেজ। সবাই চায় ঘরের সাজসজ্জার মাধ্যমে নিজেদের রুচি এবং ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে। আপনি চাইলে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারেন খুব সুন্দরভাবে।
আমাদের বাড়ির রান্নাঘর হচ্ছে প্রত্যেকটি বাড়ির কেন্দ্রবিন্দু। তাই নিজের মতো করে রান্নাঘর সাজিয়ে নেওয়া খুবই দারুণ একটি ব্যাপার।
রান্নাঘরকে সাজিয়ে নেওয়ার বিভিন্ন চিন্তা আমরা করি। কিন্তু রান্নাঘর ডিজাইনিং মানেই শুধুমাত্র হাঁড়িপাতিল কিংবা চুলার মধ্যেই সীমাবদ্ধতা নয়। ডিজাইনে থাকা চাই নতুনত্ব এবং ডিজাইনটি হওয়া চাই ছিমছাম। আর এখন আমরা জানব, কিচেন ডিজাইনিং এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় সম্পর্কে।
১। আপনার কাজের উপযোগী করে সাজিয়ে নিন
প্রথমেই খুঁজে বের করুন আপনার রান্নাঘরে কী দরকার এবং আপনি কী কী চান। আপনার প্রয়োজনীয় সকল জিনিসের ব্যবস্থা করা যথেষ্ট সহজ। প্রথমেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রাপাতি সেট আপ, ক্যাবিনেট স্থাপন, কাউন্টারটপ তৈরি করা, মেঝে ঠিক করা সহ আপনার সুবিধা অনুযায়ী কাজ নিয়ে এগিয়ে যান। এরপর অতিরিক্ত কিছুর প্রয়োজন হলে, তা আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তীতে যোগ করে নিতে পারবেন।
২। আলোকবাতির ব্যবহার
রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা জরুরী। রান্নাঘরের বিভিন্ন কাজ, রান্নার সময়ে পর্যবেক্ষণ সহ কিচেনে আলোর ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পর্যাপ্ত আলোর অভাবে বেড়ে যায় রান্নাঘরে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। তাই রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। বড় জানালা বা অতিরিক্ত আলোর ব্যবস্থা সহ রান্নাঘরকে সার্বক্ষণিক আলোকিত রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩। সবার জন্য উন্মুক্ত করুন
আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত একটি রান্নাঘর আপনার বাসাকে করে তুলতে পারে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। রান্নার জন্য নির্দিষ্ট স্থান বেছে না নিয়ে, ওপেন স্পেস বা খোলা স্পেস বেছে নিন। আর এই জায়গাটি আপনি নির্ধারণ করতে পারে আপনার ডাইনিং এরিয়ার কাছে।
একসাথে রান্না করা, খাওয়াদাওয়া, টেবিল গুছানো বা পরিষ্কার করা, সবাই মিলে সাথে গল্প কিংবা নাস্তা করতে পারেন এই কিচেন এরিয়াতেই, যার এভাবেই কিচেন এরিয়া হয়ে উঠতে পারে বাসার সবার সাথে গল্প করার দারুণ একটি স্পেস।
৪। অপ্রয়োজনীয় জিনিস দূরে রাখুন
আমাদের কিচেনে থাকা সবকিছু সবসময় ব্যবহার করা হয়না। তাই সচরাচর ব্যবহার হয় না এমন জিনিস রান্নাঘরে না রাখাই শ্রেয়।
ক্যাটাগরি অনুসারে জিনিসপত্র সাজানোর জন্য কিচেনে ক্যাবিনেট দারুণ একটি উপায়। রান্নাঘরের উপরিংশের দেয়ালে কিংবা নিচের অংশে তৈরি করা ক্যাবিনেটগুলোতে আপনি আপানর প্রয়োজন অনুযায়ী সকল কিছু সাজিয়ে রাখতে পারবেন রান্নাঘর এলোমেলো বা অগোছালো হওয়া ছাড়াই।
আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস প্যান্ট্রিতে সাজিয়ে রাখা আরেকটি দারুণ অপশন। কিন্তু ছোট পরিসরে এটি সাজানো কিছুটা কষ্টকর। এক্ষেত্রে শেলফ হতে পারে কার্যকরী অল্টারনেটিভ। আপনার প্রয়োজনীয় সকল জিনিস শেলফে রাখতে পারেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কিচেন কিংবা কিচেনের বাহিরে যেকোনভাবে সেট করতে পারেন।
৫। সহজ করে সাজিয়ে তুলুন
‘দ্য ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গেল’, এই নিয়ম অনুযায়ী কিচেন ডিজাইনের যে ৩টি মূল বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়, সেটি হচ্ছে চুলা, সিংক এবং ফ্রিজ। আপনার কিচেনকে সাজিয়ে তুলতে আপনিও ব্যবহার করতে পারেন এই নিয়মটি।
আর এই ৩টি জিনিস; চুলা, সিংক এবং ফ্রিজ এইগুলো কাছাকাছি রাখার মাধ্যমে আপনি রান্নাঘরে আপনার কাজকে আরও সহজ করে তুলতে পারেন।
৬। পরিষ্কার রাখা
রান্নাঘরে কাজগুলো শেষে কিচেনে বেশ অগোছালো হয়ে ওঠে। তাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে যত দ্রুত সম্ভব রান্নাঘরের ময়লা কিংবা অপ্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে ফেলা।
রান্নাঘরে এক্ষেত্রে সেট করতে পারেন একটি কাউন্টারটপ এবং তার পাশে ওয়েস্টবাস্কেট বা ময়লার ঝুড়ি, এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই কিচেনের ময়লা পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। আপনার সিংক এবং ডিশ ওয়াশার কাছাকাছি রাখুন, এতে করে কিচেনে অতিরিক্ত পানি ছিটবে না। সারাদিন শেষে এই কাজগুলো বেশ কষ্টকর মনে হয়, আর সহজ এই উপায়গুলোর মাধ্যমে কাজ কিছুটা হলেও সহজ হয়ে ওঠে।
নিজের মনের মতো রান্নাঘরটিকে সাজানো খুবই দারুণ একটি ব্যাপার, তবে একই সাথে পূরণ হওয়া চাই আপনার প্রয়োজনও।
তাই প্রথমে রিসার্চ করুন এবং আপনার কিচেনের ফাইনাল ডিজাইন বাস্তবায়নে নেমে পড়ুন। আর আপনার যদি এ ব্যাপারে প্রফেশনালদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তবে যোগাযোগ করুন Sheraspace এ।
এই ব্লগটি English এ পড়ুন ।
অনুবাদ: জান্নাতুল তাজরিয়া ফারসি
No Comments