যে ঘর এতোদিন একজনের ছিলো, সেটিতে দুজনের জন্য জায়গা বের করা সহজ কথা নয়। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকে নানা কাজ। অনুষ্ঠানের ভেন্যু, অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে বাকি সবকিছুর আয়োজন করা যেমন আনন্দের, তেমনি বেশ ঝামেলাজনকও। এছাড়াও সাধারণত বরদের মাথার উপর থাকে অন্য এক চাপ। নতুন বউকে তো আর একটি অগোছালো ব্যাচেলর ঘরে স্বাগত করা যায় না!
তবে চিন্তা নয়, সমস্যা সমাধানের জন্য এই ব্লগটিতে আলোচনা করা হয়েছে ৬টি নির্দেশনা, যা আপনাদের নতুন জীবন শুরু করতে লাগা ঘরকে সাজিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
১। রঙ পরিবর্তন করুন
বিয়ের বাজনা বাজছে, আপনি আপনার ঘর নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করছেন, এমন অবস্থায় আপনার ঘরের রংকে মলিন হতে দিতে নিশ্চয়ই আপনি চাইবেন না। একটি ঘরের আবহ রংই ঘরটির সম্পূর্ণ চেহারা বদলে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনার মন মেজাজ ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
আপনি তাই লাল এবং সোনালীর মতন দামী রঙ বাছাই করতে পারেন, যা আপনার ঘরে রাজকীয় ও শৌখিন আবহ তৈরি করবে।
সাদা, নীল এবং সবুজও আপনার ঘরে আনবে সজীবতা।
প্যাস্টেল রঙ কিংবা কম স্যাচুরেশনের রংও বাছাই করতে পারেন। এটি আপনার ঘরকে করবে আরামদায়ক। আপনি এবং আপনার সঙ্গী যদি কম উজ্জ্বলতা পছন্দ করেন, তবে প্যাস্টেল রংগুলো বাছাই করে নিতে পারেন।
এছাড়া আপনি চাইলে নকশাযুক্ত ওয়ালপেপারও ব্যাবহার করতে পারেন আপনার ঘরের একঘেঁয়েমিতা দূর করতে।
২। দুজনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা এবং স্টোরেজের ব্যবস্থা করা
আপনি নতুন বাড়িতে উঠুন, কিংবা পুরোনো, বিবাহিত জীবন শুরু করতে আপনাকে ঘরের আসবাবপত্র পরিবর্তন করতেই হবে। একটি সিংগেল বেড এবং সাইড টেবিল হয়তো একজনের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু দুজনের জন্য আপনাকে আরোও বিস্তারিত ভাবতে হবে।
কিং সাইজের বিছানা না কিনে, ঘরের জায়গা বাঁচাতে কুইন সাইজের বিছানা কিনতে পারেন। এর পাশে রাখতে পারেন অনেক জিনিস রাখা সম্ভব এমন ছোট সাইজের সাইড টেবিল।
আপনার লম্বা দেয়ালটিকেও কাজে লাগাতে পারেন।আপনার ঘরের জিনিসপত্র রাখার জায়গা বাড়াতে অনেকগুলো ধাপে শেলফ তৈরি করতে পারেন।
এছাড়াও আপনার বিছানার নিচের জায়গাও ব্যবহার করতে পারেন বালিশ, তোশকের মতন জিনিসগুলো রাখার জন্য। আপনার সবগুলো আসবাব আপনি কাস্টোমাইজ করে বানাতে পারেন, এবং সবগুলোতেই স্টোরেজ ব্যবস্থা করতে পারেন।
৩। একটি স্মৃতির দেয়াল তৈরি করুন
একটি দেয়ালকে আপনাদের গল্প বলার সুযোগ দিন। আপনার সঙ্গীর সাথে কাটানো সময়গুলোর ছবি দিয়ে দেয়ালকে সাজান। যাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে, তারা দেয়ালটি সাজাতে পারেন আপনাদের বিয়ের ও মধুচন্দ্রিমার ছবিগুলো ব্যবহার করেও। দেয়ালটি আলোকিত রাখুন, যাতে আপনার ঘরের কেন্দ্রবিন্দুতে না থাকলেও, সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়।
৪। ঘরকে সুগন্ধিযুক্ত রাখুন
যেকোনো স্থানই সুন্দর, যতক্ষণ এটির সুঘ্রাণ থাকে। আপনার ঘরলে সুগন্ধি করতে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন ফুল। যেমন: গার্ডেনিয়া, টিউবার রোজ, অর্কিড, ল্যাভেন্ডার এর মতন ফুল। যেকোন সুন্দর ডিফিউজারও ব্যবহার করতে পারেন, যা আপনার ঘরকে একইসাথে সুগন্ধী এবং সুন্দর দেখাবে।
এছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন সেন্টেড ক্যান্ডেল অথবা সুগন্ধিযুক্ত মোমবাতি। এক্ষেত্রে ফুলেল কোনো ফ্লেভারের মোমবাতি ব্যবহার করতে পারেন। ল্যাভেন্ডার ফ্লেভারের মোমবাতি ঘরে যেমন সুগন্ধ আনবে, তেমনি রোমান্টিক আবহও তৈরি করবে। এছাড়াও ল্যাভেন্ডার এর ঘ্রাণ ঘুমের জন্যও খুব উপকারী।
৫। সাজসজ্জা
অনেক বেশি সামগ্রীর ব্যবহার করবেন না। এতে করে ঘর অগোছালো ও ঘিঞ্জি দেখানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি বাছাই করতে পারেন কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট, কিংবা গাছের চারা সহ ছোট পাত্র, বিভিন্ন ধরনের সিরামিকের শো-পিস। ইন্ডোর প্ল্যান্টগুলো ঘরে সজীবতা আনবে। এখানে ১০টি ইনডোর প্ল্যান্টের বর্ণনা দেয়া হলো যা আপনার অন্দরমহলকে সজীব রাখবে।
৬। বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিন
ঘর সাজাতে গিয়ে নব্যবিবাহিতদের বিভ্রান্ত অনুভব করা অস্বাভাবিক কিছু না। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিলে কাজটি হয়ে ওঠে অনেক সহজ যা একাধারে আপনার সময় ও অর্থ বাঁচাবে।
আপনার মনের মতোন অন্দরমহল সাজাতে Sheraspace এর অনলাইন ইন্টেরিওর ডিজাইন কন্সালটেশন নিতে পারেন যা তিনটি সহজ ধাপে আপনাকে ঘর সাজানোর সমস্যার সমাধান দিবে।
যে কারো জীবনেরই সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি হলো বিয়ে। বিয়ের হাজারো প্রস্তুতির মাঝেও নতুন সংসারের ঘর এবং ফার্নিচার সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে কঠিন।এই লেখায় দেয়া টিপসগুলোর সাহায্যে আপনার সঙ্গীর সাথে নতুন জীবন শুরু করা সহজতর হবে, এই আশা রইলো।
এই ব্লগটি ইংরেজিতে পড়ুন।
অনুবাদ: নার্গিস হামিদ মনামী
No Comments